যৌন রোগ
রোগের নামঃ ক্ল্যামাইডিয়া
এটি কি
যৌনবাহিত রোগসমূহের মধ্যে এই রোগটি একটি পরিচিত রোগ। এটি কম বয়স্ক লোকদের মাঝে হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের বয়স ২৬/২৭ বছরের কম তাদের এই রোগ বেশী হয়। এটি সাধারণত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ফলে এই রোগ ছড়ায়।
লক্ষণ সমূহ
ক্ল্যামাইডিয়া আক্রান্ত পুরুষের পেনিস থেকে রক্ত ক্ষয়িত হতে পারে এবং প্রস্রাব করার সময় জ্বালা জ্বালা ভাব থাকতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত নারীদের যৌন থেকে এক প্রকার রস ক্ষয়িত হয়। যৌন ও তার আশে পাশে এলাকায় চুলকানি ও জ্বালাপোড়া এবং প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বেশী হবে ও তলপেটে ব্যাথা করবে।
সমস্যা সমূহ
ক্ল্যামাইডিয়া আক্রান্ত নারীদের গর্ভধারণজনিত মারাত্মক সমস্যা পোহাতে হয় এই রোগের কারনে নারীদের নিষিক্ত ডিম্বানু নির্ধারিত প্রজনন অঙ্গে স্থান না নিয়ে অন্যত্র স্থানে নেয় এবং সেখানেই বিকশিত হয়। এই রোগের ফলে শ্রেনীর প্রদাহজনিত রোগ বা পিআইডির নানা সমস্যা হয় ফলে এটি এমন মারাত্মক আকার ধারণ করে যে, পরবর্তীতে গর্ভধারন করাও অসম্ভব হয়ে উঠে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে এই রোগে অন্ডথলি, শুক্রাশয় ইত্যাদিকে আক্রান্ত করে এবং সেই ব্যক্তি পরবর্তীতে সন্তানদানে অক্ষম হয়ে পড়ে।
চিকিৎসা
এই রোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য সাধারণত বিভিন্ন প্রকার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। সেইরকম একটি এন্টিবায়োটিক হচ্ছে
টেট্রাসাইক্লিন। নিয়মমাপিক এন্টিবায়োটিক কোর্স শেষ করলে এবং নিয়মকানুন মেনে চললে এই রোগ সারিয়ে তোলা সম্ভব। এন্টিবায়োটিক মাঝ পথে এসে থামিয়ে দিলে তা আপনার জন্য মারাত্মক হয়ে উঠবে। ঔষধ শেষ হওয়ার পর একটি চেকআপ করে নিন যে, আপনি পুরোপুরি সুস্থ কিনা ?
প্রতিরোধ
ক্ল্যামাইডিয়া প্রতিরোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে একাধিক যৌনসঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে না তোলা। বেশীমাত্রায় সেক্স পার্টনার থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। অতএব এটি পরিত্যাগ করা বাঞ্চনীয় । প্রতিবার সঙ্গমের সময় কনডম ব্যবহার করা। জুনিয়ন্ত্রক ফোম বা জেলি ব্যবহার করা ভালো। বছরে একবার অন্তত ডাক্তারী পরীক্ষা করে কোন সমস্যা আছে কিনা তাহা দেখা।
রোগের নামঃ গনোরিয়া
গনোরিয়া নামক এসটিআই বা যৌনবাহিত রোগটি ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে সংক্রামিত হয়। তবে চুম্বন, হাত ধরা বা টয়লেট সিট থেকে গনোরিয়া বিস্তার লাভ করে না। কিন্তু যোনি বা পায়ুপথে মিলন বা সঙ্গম বা ওরাল সেক্স বা মুখমেহন ইত্যাদির মাধ্যমে গনোরিয়া বিস্তার লাভ করতে পারে। এটা পেনিস বা পুরুষাঙ্গ, সারভিক্স বা জরায়ুর ছিদ্র, রেকটাম মলাশয় বা পায়ু, গলা ও চোখকে আক্রান্ত করতে পারে। এই ইনফেকশনজনিত কারণে বন্ধ্যা হয়ে যাওয়া মোটেও অস্বাভাবিক না যাতে কিনা গর্ভধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। গর্ভবতী মহিলা যারা গনোরিয়া আক্রান্ত তাদের প্রসবজনিত সন্তানও সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারে এই ইনফেকশনের কারণে। সন্তান অন্ধ পর্যন্ত হয়ে পড়তে পারে।
লক্ষন সমূহ
উপসর্গসমূহ সাধারণত গনোরিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার এক থেকে দুই সপ্তাহের মাঝে প্রকাশ পায়। পুরুষের ক্ষেত্রে পেনিস থেকে হলুদাভ ক্ষরণ বা রস ক্ষরিত হতে পারে বা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হতে পারে। নারীরা তাদের পিরিয়ডের অন্তর্বর্তীকালীন সময় যোনি থেকে এক অস্বাভাবিক ক্ষরণ খেয়াল করতে পারেন। এই রস বা ক্ষরণসমূহ নানা রং বা গন্ধের হতে পারে। তবে স্বাভাবিক যে ক্ষরণ তার চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতির হয়। গনোরিয়ায় আক্রান্ত নারীরা তলপেটে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। আপনি গনোরিয়ায় আক্রান্ত কিনা তা জানার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে ল্যাবরেটরি পরীক্ষা। এই টেষ্টটি খুব সাধারণ ও একেবারেই ব্যথাহীন।
চিকিৎসা
গনোরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধই সেব করা উচিত এবং ডাক্তারের দেয়া সব নিয়মকানুন অবশ্যই মেনে চলা উচিত। ওষুধ সেবন শেষ করে আবারো পরীক্ষা করে দেখতে হবে আপনি গনোরিয়া থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছেন কিনা। আপনার যত সেক্স পার্টনার বা যৌনসঙ্গী আছে, তাদের চিকিৎসাও অবশ্যই করাতে হবে। তাদেরকে চিকিৎসা না করালে আপনাকে আবার সংক্রমিত করতে পারে।
রোগের নামঃ যৌনাঙ্গে টিউমার ও এইচপিভি
যৌনাঙ্গে টিউমার সাধারণত যোনি সঙ্গমের সময় এইচপিভির সাহায্যে সংক্রমিত হয় এবং বিস্তার লাভ করে। ভাইরাসটির সংস্পর্শে আসার ২-৩ মাসের মাঝে টিউমারটি ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে তবে এগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে এতটাই ক্ষুদ্র হতে পারে যে, খালিচোখে স্পষ্টভাবে দেখা যায় না। এগুলো এই লিঙ্গ বা পেনিসে, যোনিতে, সারভিক্স বা জরায়ুর ছিদ্রপথে মুখ বা মলাশয় বা পায়ুতে হতে পারে। দেখতে সাধারণ ত্বকের টিউমারের মতোই নরম পিংক বা ছোট কদমফুলের মতো দেখাতে পারে অথবা শক্ত, হলুদাভ, ধূসর এবং মসৃণ হতে পারে। একটি নির্দিষ্ট জায়গাতে অনেকগুলো জেনিটাল ওয়ার্টস থাকতে পারে। দেহের বহিরাংশে হলে রঞ্জক জাতীয় একটা বিশেষ ওষুধের সাহায্যে এর চিকিৎসা করা হয় অথবা দেহের অভ্যন্তর অংশে হলে কোন ডাক্তার দিয়ে অপসারণ করতে হতে পারে। গর্ভাবস্থায় নারীর জেনিটাল ওয়ার্ট থাকলে তা সন্তানে পরিবাহিত হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা সরাসরি আরোগ্য লাভের জন্য কিছুই নেই। কেউ এই ভাইরাস সারা জীবন একে বহন করতে হবে এবং এটা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার লাভ করার একটা মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। এক ধরনের ভাইরাস আছে যেগুলো কিনা সারভিক্সের ক্যান্সারের সাথে জড়িত। প্রতিবছর একবার হলেও প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করে দেখা উচিত। প্রতিবার যৌনসঙ্গমের সময় একটা ল্যাটেক্স কনডম ব্যবহার করে আপনি নিরাপদে থাকতে কন্ট্রাসেপটিভ ফোম, জেলি বা ক্রিম বাড়তি সতর্কতা বা নিরাপত্তা প্রদান করে।
রোগের নামঃ হার্পস
হার্পস একটি ভাইরাস যা কিনা সাধারণ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে যোনি বা পায়ুপথে মিলন বা সঙ্গমের সময় অথবা ওরাল সেক্সের সময় বিস্তার লাভ করে যৌনাঙ্গের হার্পস খুব সৃষ্টি করে যেগুলো মূলত সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে মিলনের ২৫০-৩৬০ দিনের ভেতরে হয়। এগুলো সাধারণত ভাইরাস যেখানে অনুপ্রবেশ করে সেখানেই তেরী হয়। পেনিস, টেস্টিকল, শুক্রাশয়, উরু, পুচ্ছদেশ, যোনি ছিদ্রে বা যোনির ভেতরে অথবা এনাস বা পায়ুতে হতে পারে। উপসর্গসমূহ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, গ্রন্থি ফোলা, প্রস্রাব করতে সমস্যা বা কষ্ট হওয়া ইত্যাদি। নারীরা সাধারণত তলপেটে ব্যথা অনুভব করে থাকে। চুলকানি থাকে ফলে ফলশ্র“তিতে ব্যথাযুক্ত ক্ষত বা ঘা সৃষ্টি হয় যা শুকাতে কয়েক সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষত বা ঘা শুকানোর পরেও হার্পসের জীবাণু বা ভাইরাস উপস্থিত থাকতে পারে এবং পরবর্তীতে আবার নতুন করে একই রকম সংক্রমণের সম্ভাবনাও যথেষ্ট। তবে দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ক্ষেত্রে মাত্রা বা তীব্রতা থাকে অল্প বা হাল্কা ধরনের এবং বেশিদিন সাধারণত এগুলোকে হাত দিয়ে একবার স্পর্শ করে সেই হাত শরীরের অন্যত্র স্পর্শ করাবেন যদি সংক্রমিত অংশকে স্পর্শ করেই ফেলেন তবে সাবান-পানি দিয়ে অবিলম্বে পরিস্কার করুন। এই ভাইরাসটির এতই ছোঁয়াচে যে, কনডম ব্যবহার করার পরেও যৌন সঙ্গমের সময় একজন পার্টনার থেকে অন্য যৌনসঙ্গীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সংক্রমিত বা ইনফেকশনকৃত জায়গায় শারীরিক স্পর্শ থেকে সম্পর্ণ বিরত থাকা সেক্স পার্টনারের সাথে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বা বিস্তার নিয়ে একেবারে খোলামেলা আলাপ আলোচনা করুন। আপনি যদি গর্ভধারন করে থাকেন, তবে ডাক্তারের সাথে হার্পস সংক্রমণের ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করুন। সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার সময় হার্পস যা থেকে শিশুতে বিস্তার লাভ করতে পারে। যদিও হার্পস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণের তেমন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই তথাপি ব্যথা ও অস্বস্তি দূর করার কতিপয় পন্থা আছে।
শরীরের সংক্রমিত স্থানটিকে পরিস্কার ও শুস্ক রাখুন
কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন
ক্ষত বা আশপাশের স্থান হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন।
সিনথেটিক কাপড়ের তৈরি কোনো আন্ডারওয়্যার বা অন্তর্বাস পরিধান করবেন না।
যদি প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়, তবে পরিমিত পানি পান করুন।
রোগের নামঃ সিফিলিস
সিফিলিস নামক এসটিআই বা যৌনবাহিত রোগটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সাহায্যে হয় এই ব্যাকটেরিয়াটি যৌনসঙ্গম, পায়ুসঙ্গম বা ওরাল সেক্সের সময় একজন থেকে আরোকজনে সহজেই বি¯তৃতি লাভ করে। সিফিলিস সাধারনত ছড়ায় ব্যক্তির ক্ষত বা ঘা র্যাশ বা ফুসকুড়ি স্যালাইভা বা লালা, বীর্য বা যোনি থেকে নিঃসৃত রক্ত বা তরল পদার্থ থেকে। সংস্পর্শে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের ভেতর সিফিলিসের লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ পরিস্কারভাবে বোঝা যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত পেনিসের উপরিভাগে হয় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনির ভেতরে বা বাইরের দিকে হয়। এটা যোনির ভেতরের দিকের গাত্রে হলে অনেক নারীই তা বুঝতে পারে না। সিফিলিস ব্যাকটেরিয়া ২-৫ মাসের ভেতর শরীরের অন্যান্য অংশে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে বেশি ক্লান্ত, অবসন্ন, জ্বরজ্বর বোধ বা ক্ষুধা ও রুচি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ভূগতে পারে। শরীরের ত্বকে র্যাশ দেখা দিতে পারে বা চুল হাঠাৎ কিছু পড়া শুরু করতে পারে। সিফিলিস হার্ট ও মস্তিক্স বা ব্রেনের স্থায়ী মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে-এমনকি এ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সিফিলিস মা থেকে ভ্রƒণে পরিবাহিত হতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চার জুগত ত্র“টির কারন হয়ে দাঁড়ায়। রক্তের একটি সাধারণ পরীক্ষার সাহায্যে সিফিলিস রোগটি নিশ্চিত করতে পারেন। প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর সিফিলিসের পরীক্ষাটি করা উচিত। আপনার যদি সিফিলিস রোগটি নিশ্চিত হয়েই থাকে, তবে এন্টিবায়োটিক যেমন পেনিসিলিন দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় পুরো কোর্স অবশ্যই শেষ করা উচিত। ওষুধের পুরো কোর্স সেবন করে আবারো রক্ত পরীক্ষা করে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনি সিফিলিস থেকে মুক্ত যৌনসঙ্গীর রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে এবং একই সাথে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে হবে। সিফিলিস চিকিৎসা চলাকালীন সময় বা সম্পূর্ণ আরোগ্য না হয়ে কারো সঙ্গে সেক্স করবেন না। আপনার যদি একজনমাত্র সেক্স পার্টনার থাকে ও আপনি সিফিলিসমুক্ত থাকেন এবং আপনি নিশ্চিত যে পার্টনারের এসটিডি নেই বা অন্য কোনো যৌনসঙ্গী নেই, তবে আপনার সিফিলিস হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। আপনার যদি একাধিক যৌনসঙ্গী থাকে তবে ব্যাকটেরিয়ার বি¯তৃতি রোধকল্পে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করা উচিত। জুনিয়ন্ত্রণ ফোম, জেলি বা ক্রিম বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করে। আপনার পার্টনারের যদি সিফিলিস হয়েই থাকে তবে ডাক্তার যে পর্যন্ত না বলবে যে পার্টনার সম্পূর্ণ যৌনবাহিত রোগমুক্ত, ততোদিন সেক্স করা একেবারেই অনুচিত ও বেশ ঝুঁকিপূণ।
রোগের নামঃ এইডস এবং হিভ
এইডস আক্রান্ত রোগীর এইডসের নানা উপসর্গ থাকে বিশেষ ২১ ধরনের নানা অসুস্থতা বিদ্যমান থাকে। তারা সে ভাইরাস কর্তৃক সংক্রমিত হয়ে থাকে তাকে বলে হিভ আর যাদের হিভ রয়েছে তাদেরকে বলে হিভ পজিটিভ। হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসটি সাধারণত রক্ত, সিমেন বা বীর্য, যোনিরস বা শরীরের অন্যান্য তরল দিয়ে পরিবাহিত হতে পারে। ভাইরাসটি শরীরে বিস্তার লাভ করে ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত করে, শরীর সাধারণ অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না। ভাইরাসে আক্রান্তদের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ থাকে না- কোনো কোনো রোগী এই ভাইরাসকে সুপ্ত অবস্থায় নিয়ে অনেক বছর কাটিয়ে দেয়। তথাপি তারা স্বাস্থ্যবান থাকে। যারা হিভ পরিজিটিভ তাদের ক্যান্সার বা নিউমোনিয়ার মতো সংক্রামক জটিলতা থাকে। এসব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হওয়া কিছু যৌনক্রিয়া বা আচরণ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে এইডস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রথমটি হচ্ছে কনডম ব্যবহার ব্যতিরেকে যৌনসঙ্গম বা পায়ুসঙ্গম করা একই সুচ বা সিরিঞ্জ অনেকজন ব্যবহার করা। যৌনসঙ্গীর সাথে মিলনে কনডম ব্যবহার করুন কন্ট্রাসেপটিভ বা জুনিয়ন্ত্রণ ফোম, জেলি বা ক্রিম ইত্যাদি বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করে। অন্যের ব্যবহৃত সুচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করুন। অন্য কারো রেজার বা ব্যবহৃত ব্লেড কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়।
রোগের নামঃ যৌনাঙ্গে উকুন ও খোস-পাঁচড়া
যৌনাঙ্গের উকুন সাধারণত যোনিকেশে অবস্থান করে এগুলো শারীরিক সংস্পর্শের সাহায্যে একজন থেকে আরেকজনে পরিবাহিত হতে পারে। অন্যের শোবার বিছানা বা কাপড় থেকেও আরেকজনের তা হতে পারে। উকুনজনিত উপসর্গের মাঝে প্রধানটি হচ্ছে চুলকানি এমনকি এরা রক্ত পর্যন্ত চুষতে পারে। আপনি হয়ত অন্তর্বাসে ছোট কালো দাগ বা রক্তের ফোঁটার দাগ দেখতে পেতে পারেন। চুলের গোড়ায় আপনি হয়ত উকুনের ডিম দেখতে পারেন। উকুনজনিত সমস্যা এড়াতে লোশন বা শ্যাম্পু ড্রাগ স্টোর থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। লোশন বা শ্যাম্পু ব্যবহারের নিয়মাবলীসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলুন।রোগটিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার জন্য এক সপ্তাহ পর ট্রিটমেন্ট পুনরায় করুন। ট্রিটমেন্ট শেষ হওয়ার পর সব কাপড়-চোপড়, টাওয়েল বা বিছানাপত্র গরম পানিতে ধুয়ে নিন। উকুনগুলো সাধারণত শরীর ত্যাগ করার ২৪ ঘন্টার ভেতর মারা যায়। তবে উকুনের ডিমগুলো অনেককক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। খোস-পাঁচড়ার জটিলতার একটা মূল উপসর্গ হচ্ছে প্রচন্ড চুলকানি। খোস-পাঁচড়ার জীবানূ ডিম পড়ার জন্য হাত, পা বা যৌন এলাকার চামড়ার নিচে চলে যায়। যে কোনো প্রকারের শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে খোস-পাঁচড়া একজন থেকে আরেকজনে পরিবাহিত হতে পারে। এমনকি পুরো পরিবারের সবাই এর শিকার হতে পারে। একটা বিশেষ লোশন পুরো শরীরে ব্যবহার করেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
রোগের নামঃ হেপাটাইটিস বি
হেপাটাইটিস বি যকৃত বা লিভারের একপ্রকার ভাইরাসজনিত মারাত্মক ইনফেকশন। এই ভাইরাসটি রক্ত, বীর্য, যোনি থেকে নিঃসৃত রস বা আক্রান্ত ব্যক্তির লালাতে অবস্থান করতে পারে। যৌন আচরণের সময় ভাইরাসটি বি¯তৃতি লাভ করতে পারে। গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে ভ্রƒণে হেপাটাইটিস ভাইরাসটি পরিবাহিত হতে পারে। হেপাটাইটিসের মূল উপসর্গ হচ্ছে অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ বা বমনেচ্ছ, অরুচি, পেট ব্যথা, ও জন্ডিস ইত্যাদি। ত্বক, চোখের সাদা অংশ, প্রস্রাব,-পায়খানা হলুদ হয়ে যাওয়াকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হেপাটাইটিসের তেমন কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। রক্ত পরীক্ষার সাহায্যে ডাক্তাররা হেপাটাইটিস বি সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এই ভাইরাসের সংক্রমন এড়ানোর জন্য এক ধরনের টিকা রয়েছে। এই টিকাটি কয়েক মাসের ভেতর নিয়মানুযায়ী মোট তিনবার দিতে হয়। কারো হেপাটাইটিস বি কর্তৃক সংক্রমণ নিশ্চিত হলে যৌন আচরণে অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একবার কারো হেপািটাইটস হলে এটি সম্পূর্ণ আরোগ্য করানোর চিকিৎসা নেই। তবে এটি মোটামুটি সারতে সপ্তাহ বা মাস অবধি সময়ের প্রয়োজন।
মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১১, ২০১১
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন